অপূর্ব লাল সরকার, আগৈলঝাড়া (বরিশাল) থেকে :
আগৈলঝাড়ায় যৌণ হয়রানির প্রতিবাদ করায় সংখ্যালঘু পল্লীর
অন্ত:স্বত্তা মহিলাসহ আহত ১২ জন :
তদন্তে সত্যতা পেয়ে ওসিকে মামলা নেয়ার নির্দেশ দিলেন এসপি
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ‘সংখ্যালঘু স্কুল ছাত্রীকে যৌণ নিপীড়ণ’ এর সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়েছে উর্ধতন পুলিশ প্রশাসনের। পুলিশ সুপারের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সংবাদের সত্যতা পেয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর মল্লিক। মামলা নিয়ে আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য নির্দেশ দেন তিনি।
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এক স্কুল ছাত্রীকে যৌণ নিপীড়ণের প্রতিবাদ করায় বখাটেদের হামলায় বারপাইকা সংখ্যালঘু পল্লীর অন্ত:স্বত্বা গৃহবধূসহ ১২ জন আহত হওয়ার ঘটনার থানা পুলিশ কোন মামলা না নেয়ার সংবাদ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পর বিকেলে বরিশালের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর মল্লি¬¬ক ঘটনা তদন্তে আসেন। তিনি বারপাইকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের হলরুমে ঘটনার বর্ণনা শোনেন। নিগৃহীতা ওই ছাত্রীর ভাই নিলয় হালদার, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রবীন্দ্র নাথ হালদার, রতœপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা সরদারসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ঘটনার বিবরণ দেন। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনার সত্যতা পেয়ে আগৈলঝাড়া থানার ওসিকে মামলা নিয়ে দ্রুত আসামী গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।
সূত্র মতে, উপজেলার সাহেবেরহাট বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দা সংখ্যালঘু মন্টু হালদারের বারপাইকা স্কুলের ১০ম শ্রেণী পড়–য়া মেয়েকে যৌণ হয়রানি করে আসছিল বারপাইকা মুসলিম পাড়ার আলমগীর শাহ’র ছেলে নিশাত শাহ (২২)। তাকে সহায়তা করে আসছিল একই এলাকার বিএনপি ক্যাডার ও অবরোধে গাড়ি পোড়ানো মামলার অন্যতম আসামী আনোয়ার শাহ’র ভাই রহিম শাহ ও তার বন্ধু একই এলাকার মতি মোল্লার ছেলে মশিউর।
গত বৃহস্পতিবার ওই ছাত্রী স্কুলে আসার পথে তাকে যৌণ নিপীড়ণের সময় বারপাইকা স্কুল সংলগ্ন বাড়ির গোবিন্দ সরকার এর প্রতিবাদ করে। গোবিন্দর প্রতিবাদের জের ধরে গত শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে ওই তিন বখাটের নেতৃত্বে ১৫-১৬ জনের একটি দল আকস্মিক গোবিন্দর বাড়িতে গিয়ে তার উপর হামলা চালায়। এসময় গোবিন্দকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে একই এলাকার তপন বল্লভ ও তার অন্ত:স্বত্বা স্ত্রী কণিকা রাণী। হামলাকারীরা তাদের উপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এলাকায় হৈচৈ শুনে হামলাকারীদের প্রতিহত করতে এসে তাদের হামলার শিকার হয়ে আহত হন ওই গ্রামের আরও ১০ জন। গুরুতর আহতাবস্থায় তপন বল্লভ ও তার স্ত্রী কণিকাকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলা চলাকালীন সময়ে ওসিকে বিষয়টি অবহিত করলেও থানা থেকে কোন পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি। এমনকি তপন বল্ল¬ভ বাদী হয়ে অভিযোগ করতে গেলেও পুলিশ তা মামলা আকারে রেকর্ড করেনি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নির্দেশের পরে আগৈলঝাড়া থানা ওসি মো. মনিরুল ইসলামকে মামলা রেকর্ড করে আসামীদের গ্রেফতারে জন্য নির্দেশ দেন। থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আসামীদের গ্রেফতার করে এসপি স্যারকে জানাতে বলেছেন।